কুমার বিক্রমাদিত্য: তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীদের একের পর এক অডিও ক্লিপ ফাঁস মমতার রাজনৈতিক ভন্ডামির মুখোশ খুলে দিয়েছে। নন্দীগ্রামের প্রলয় পাল থেকে কোচবিহারের পার্থপ্রতিম এমনকি রাজনৈতিক ম্যানেজার প্রশান্ত কিশোরের অডিও ক্লিপ বাংলার মানুষের চোখ খুলে দিয়েছে। সংবাদ মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আসল সত্যিটা এখন মানুষের সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে। বুঝতে বাকি নেই জনসমক্ষে মমতা এবং তার নেতারা যা বলছেন তা সবই মিথ্যায় ব্যাসাতি। শীতলকুচিতে গুলি কাণ্ডে তিনি যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছিলেন, তা এখন মানুষের কাছে পরিষ্কার। মমতার অডিও ক্লিপ আর শীতলকুচির সেদিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ এখন সবকিছু জলের মত পরিস্কার করে দিয়েছে। কার্যত শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে নির্বাচন কমিশনের সেই বক্তব্যই মানুষ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে নিতে শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গবাসী জেনে গেছে আসলে সেদিন শীতলকুচির জোরপাটকি গ্রামের 126 নম্বর বুথে হিন্দু ভোটারদের আটকাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ছাপ্পা, রিগিং আর জোরপূর্বক ভোট করাতে চেয়েছিল তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী। কেন্দ্রীয় বাহিনী এই অন্যায়কে প্রতিরোধ করে করতে গিয়েই সন্ত্রাসবাদীদের মুখোমুখি হয়। কিন্তু সন্ত্রাসবাদীরা এতই শক্তিশালী ছিল যে, তারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনো চোখ-রাঙানিকে তোয়াক্কা করেনি।
কারণ তাদের মদত জুগিয়েছিল শাসকদল। অনেক চেষ্টা করেও কেন্দ্রীয় বাহিনী এদেরকে আটকাতে পারেনি। অবশেষে যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল, আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল সরকারি সম্পত্তি, নির্বাচন আধিকারিক, বিভিন্ন ভোট কর্মী এবং সাধারণ মানুষের প্রাণহানির। তখন কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালাতে বাধ্য হয়। যদিও প্রথমে কেন্দ্রীয় বাহিনী কোনও মানুষের উপরে গুলি করেনি। প্রথমে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে বলে জানা গিয়েছে। অবশেষে সেটাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হওয়ায় তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। মৃত্যু হয় ৪ জনের। আর এই মৃত্যুকে নিয়েই রাজনীতি করার পরিকল্পনা করে শাসক দল।
কিন্তু বিজেপির যুযুধান নেতারা আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন। বেশ কিছু নথি আগে থেকেই সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। পঞ্চম দফা ভোটের ঠিক আগের মুহূর্তে সেই প্রমাণগুলো এক এক করে জনসমক্ষে আনতে শুরু করেছেন। এদিকে, ১০ এপ্রিলে জোরপাটকির ঘটনার পর এখনও গ্রামের নিরীহ হিন্দু পরিবারগুলি ঘরছাড়া। প্রাণভয়ে তারা বাড়ি যেতে সাহস পাচ্ছেন না। দেওয়া হচ্ছে হুমকিও। ঘরছাড়া হিন্দু পরিবারের মহিলাদের বক্তব্য, যেখানে পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও নিরাপত্তা নেই, তাদের উপর আক্রমণ হয়, বন্দুক কেড়ে নেওয়া ও মারধোরের চেষ্টা হয়, সেখানে আমরা সাধারণ গ্রামবাসী কোন ভরসায় গ্রামে ফিরব? তাদের আরও অভিযোগ, গত দশ বছর ধরে জোরপাটকি গ্রামের হিন্দুদের এভাবেই ভোট দানে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে ২৮৫ নং বুথে আনন্দ বর্মনের মৃত্যুর দায় মমতা যেভাবে বিজেপির উপর চাপানোর চেষ্টা করেছিলেন, তা কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাদের সরাসরি অভিযোগ, তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনীই এই আক্রমণ চালিয়েছে। প্রতি বছরই তাদের ভোট দিতে বাধা দেয় তৃণমূল। এবার গ্রামের বিজেপি সমর্থকরা সিদ্ধান্ত নেন, যত বাধা আসুক এবার তারা ভোট দেবেন। আর সেই সিদ্ধান্ত অটল থাকায়, প্রাণ দিতে হল ১৮ বছরের নতুন ভোটার আনন্দ বর্মনকে। কিন্তু, তাতেও দমাতে পারেনি তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনী। এমনকি ছেলের মৃত্যু যন্ত্রণা বুকে নিয়েও ভোট দেন আনন্দের মা।






Keu kom jachhena.
Befas montobyote BJP netara egie.
RIGHT