Home State ভোটের ফলে বাংলা স্টেটসম্যানের ভবিষ্যৎবাণী সত্যি প্রমাণিত হল

ভোটের ফলে বাংলা স্টেটসম্যানের ভবিষ্যৎবাণী সত্যি প্রমাণিত হল

253
0

https://bit.ly/2SqxNr9

বাংলা স্টেটসম্যান: বাংলা স্টেটসম্যানের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি প্রমাণিত হল। অল্প ভোটের মার্জিনে প্রায় 92 টি আসন হাতছাড়া হল বিজেপির। গত 29 এপ্রিল দিনটি ছিল রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের শেষ তথা অষ্টম দফা ভোট গ্রহণ। এই দিনেই ভোটগ্রহণের প্রায় শেষ পর্যায়ে বাংলা স্টেটসম্যান ডিজিটাল পোর্টাল একটি সংবাদ প্রকাশ করে। এই সংবাদে উল্লেখ করা হয় এবার বিধানসভা নির্বাচনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভের কারণে 70 থেকে 80 টা আসন হাতছাড়া হতে পারে বিজেপির। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল 213 টি আসন পেয়ে ফের রাজ্যের ক্ষমতা দখল করল। আর বিরোধী দল বিজেপি পেল মাত্র 77 টি আসন। গত লোকসভা ভোটেই বিজেপি এগিয়ে ছিল 121 টি বিধানসভা কেন্দ্রে। কিন্তু কেন এই ফল? তার আভাস অনেক আগেই পেয়েছিল বাংলা স্টেটসম্যানের ডিজিটাল পোর্টাল। রাজ্যজুড়ে বিধানসভা নির্বাচনে অনেক আট ঘাট বেঁধে নেমেছিল বিজেপি। নির্বাচনের আগেই অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে গিয়েছিল যে, এবার ক্ষমতায় মমতাকে হারিয়ে বিজেপি জয়লাভ করবে। কিন্তু বিজেপির রণকৌশলে বেশ কিছু ভুল ছিল। যাকে বলে বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভুল হল দলের পুরোনো কর্মীদের অবহেলা করা। আর প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূল থেকে আসা প্রার্থীদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে দলের যোগ্য নেতাদের সরিয়ে দেওয়া। এর ফলে দলের অভ্যন্তরে একটা প্রবল ক্ষোভ-বিক্ষোভ তৈরি হয়। আর এই সেই ক্ষোভ বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার পক্ষে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াল। রাজ্যজুড়ে মানুষ পরিবর্তন মুখী হয়ে পড়লেও বিজেপির আভ্যন্তরীণ গলদের কারণে কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্তে এই বিপর্যয় হল। সবচেয়ে বড় ভুল দলের পুরোনো কর্মী দের গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের কাছের লোককে প্রাধান্য দেওয়া। প্রার্থীদেরকে টিকিট বন্টনের ক্ষেত্রে জেলা ও রাজ্য নেতাদের এমনকি কেন্দ্রীয় নেতাদের অর্থনৈতিক লেনদেন। এরপর সেইসব প্রার্থীরা ভোট প্রচারের সময় দলের পুরনো কর্মীদের দায়িত্ব না দিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ কিছু আনকোরা কর্মীদের উপর নির্ভর করা এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। সম্প্রতি এ বিষয়ে বনগাঁ লোকসভার বিধানসভা কেন্দ্র গুলিতে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক লেনদেনের একটি অডিও ক্লিপ বাংলা স্টেটসম্যানের হাতে এসেছে। যদিও এই অডিও ক্লিপটি সত্যতা যাচাই করেনি বাংলা স্টেটসম্যান।

https://bit.ly/2SqxNr9

এই অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাই না করলেও সেখানে শোনা যাচ্ছে, একজন টিকিট প্রার্থীর আত্মীয়ের সঙ্গে বনগাঁ জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায়ের কথোপকথন চলছে। এখানে শ্রীমান প্রবীর রায় সেই টিকিট প্রার্থীর ভাইপোর সঙ্গে কথোপকথনের সময় জেলা সভাপতির হয়ে অর্থের দাবি করছেন। তিনি সেখানে স্পষ্ট বলছেন জেলা সভাপতি কে কিছু না দিলে টিকিট পাওয়া সম্ভব নয়। এই ঘটনা থেকে পরিষ্কার বিজেপির জেলা ও রাজ্য নেতারা টিকিট বন্টনের ক্ষেত্রে একটি দুর্নীতি করেছেন। একটি গোপন সূত্র থেকে আমরা এটাও জানতে পেরেছি, এই টিকিট বন্টনের ক্ষেত্রে টাকার দাবিদার দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কেন্দ্রীয় নেতাও আছেন। এদিকে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জেলায় প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই অর্থনৈতিক লেনদেনের আভাস দলের অবহেলিত পুরনো নেতারাও জানতে পেরেছেন। আর এই খবর জানাজানি হওয়ার ফলেই রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে ক্ষোভ নেমে এসেছে। বিক্ষুব্ধ হয়ে অনেক নেতা ও কর্মীরা ভারতীয় জনসংঘ থেকে ক্রিকেট নিয়ে প্রার্থী পদে দাঁড়িয়ে গেছেন। রাজ্যজুড়ে এই জনসংঘ এবং নির্দল মিলিয়ে প্রায় একশত প্রার্থী নির্বাচনে লড়াই করেছেন। আর তারা প্রত্যেকে তিন থেকে চার হাজার করে ভোট কেটেছেন। কোথাও কোথাও তার বেশি বা কম হয়েছে। তবে এই মার্জিন ভোট কাটার ফলে 70 থেকে 75 টি আসনে বিজেপি প্রার্থীরা খুব সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। অধিকাংশ আসনে সেই ভোটের ব্যবধান এক-দেড় হাজার। হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় জনসংঘ প্রার্থীরা যে ভোট পেয়েছেন বা বিজেপির বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থীরা যে যে ভোট পেয়েছেন তা যোগ করলে প্রায় 75 টি আসনে বিজেপি প্রার্থীরা তৃণমূলকে হারিয়ে দিতে পারতো। আর এই প্রার্থীদের অধিকাংশই বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা ও কর্মী। যেমন- বারাসাতে সুদর্শন দাশ, যাদবপুরের রেইন ম্যান ও আইনজীবী নৃপেন্দ্র কৃষ্ণ রায় এরা সবাই বিজেপির ই বিক্ষুব্ধ নেতা ও কর্মী। এক সময় মনে প্রানে তারা বিজেপি করতেন। কিন্তু দলের ভিতরে বৈষম্য সহ্য করতে না পেরে তারা প্রতিবাদ স্বরূপ প্রার্থী হয়েছেন। এভাবেই রাজ্যজুড়ে বিজেপিকে খাটতে হয়েছে তৃণমূলের কাছে।

Previous articleব্যান্ডেজ করা পা দেখিয়ে 7 শতাংশ ভোট বেড়েছে মমতার
Next articleহিংসার আবহে শপথ মমতার, শিয়রে কড়া নাড়ছে রাষ্ট্রপতি শাসন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here