অনুব্রতরও কি এবার ঠাঁই হবে তিহার জেলে?

    200
    0

    সংবাদ কলকাতা, ৫ নভেম্বর: ইতিমধ্যে গরু পাচার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে অনুব্রত মন্ডল। তাঁর ছায়াসঙ্গী সায়গল এখন তিহার জেলে। এরই মধ্যে পরপর তিন দিন দিল্লির ইডি অফিসে জেরা চলছে অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মন্ডলের। তবে সূত্রের খবর, সুকন্যার কাছ থেকে তেমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসার উত্তরে তিনি বারবার বলেছেন, বাবা জানে। অথবা মনীশ কোঠারী জানে। সূত্রের খবর, এবার তাই দিল্লির ইডি অফিসাররা হাতে পেতে চাইছেন অনুব্রতকে। তার জন্য শুরু হয়েছে আইনি প্রক্রিয়া। তবে কি এবার অনুব্রতরও ঠাঁই হতে চলেছে দিল্লির তিহার জেলে?
    লটারির মাধ্যমেই কি গোরু পাচারের কালো টাকা সাদা করেছেন অনুব্রত মণ্ডল? তথ্য জোগাড়ে হঠাৎ সক্রিয়তা বাড়িয়েছে ইডি এবং সিবিআই। সাঁড়াশি চাপে কেষ্টকে নাস্তানাবুদ করতে মরিয়া তারা। গোরু পাচার ও লটারির মধ্যে যোগসূত্র বের করতে আলাদা আলাদা পন্থা নিয়েছে দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সিই। কালো টাকা সাদা করার কৌশল জানতে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করতে চান ইডির তদন্তকারীরা। আগামী সপ্তাহে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে সেই আবেদন জমা পড়ার কথা। তার আগে শনিবার আসানসোল জেলের মধ্যে সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়লেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। লটারি ইস্যুতে তদন্তে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন আধিকারিকরা।  
    গত বছর একটি লটারি সংস্থার ওয়েবসাইটে অনুব্রতর এক কোটি টাকা জেতার ছবি সহ বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছিল। গোরু পাচারের মামলায় তিনি সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়তেই এব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়। অপর তদন্তকারী সংস্থা ইডিও এই নিয়ে নথি জোগাড় করতে থাকে। প্রাথমিকভাবে দুই তদন্তকারী সংস্থাই একটি বিষয়ে নিশ্চিত, আসল বিজেতা অন্য কেউ। তাঁর টিকিটের সাহায্যে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। ইডির দাবি, ওই কালো টাকা গোরু পাচারের। 
    শুক্রবারই সংশ্লিষ্ট লটারি বিক্রেতা ও এজেন্ট সহ কয়েকজনকে জেরা করে সিবিআই। জানা যায়, এজেন্ট বা খুচরো বিক্রেতা কেউই অনুব্রতকে টিকিট বেচেননি। সিবিআই তৃতীয় এক ব্যক্তির সন্ধান পায়। জানা যায়, তিনি অনুব্রত ঘনিষ্ঠ। ওই ব্যক্তি টিকিট কেটেছিলেন। তা কয়েক হাত ঘুরে কেষ্টর কাছে পৌঁছয়। এই বিষয়ে বিশদ জানতে এদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আসানসোল জেলে যান সিবিআই আধিকারিকরা। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘আপনি কী নিয়মিত লটারি কাটেন?’ প্রশ্নটা হেসেই উড়িয়ে দেন কেষ্ট। আধিকারিকরা ফের জিজ্ঞাসা করেন, ‘এক কোটি টাকা পাওয়ার লটারি কবে, কখন কেটেছিলেন? লটারি জেতার কথাই বা কখন জানতে পারলেন?’ এসব প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি অনুব্রত। লটারি জেতার টাকা কীভাবে এল, তার উত্তর না মেলায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি তুলে ধরেন তদন্তকারীরা। জানতে চাওয়া হয়, বিপুল পরিমাণ টাকা সেখানে এল কীভাবে? কেষ্ট ফের নিশ্চুপ হয়ে যান। বেলা দুটো নাগাদ সিবিআই অফিসাররা বেরিয়ে যান জেল থেকে।
    অনুব্রত প্রশ্ন এড়ালেও, লটারির মাধ্যমে গোরু পাচারের কালো টাকা সাদা করা সংক্রান্ত নথি ইডি জোগাড় করে ফেলেছে বলে সূত্রের খবর। সায়গল ঘুরিয়ে স্বীকার করেছেন, টাকার বিনিময়ে লটারির টিকিট এসেছিল অন্য জায়গা থেকে। অনুব্রত কন্যা সুকন্যা ইডি আধিকারিকদের এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা এই রহস্যের অনেকটাই উন্মোচন করেছে। ইডির তদন্তকারীরা বলছেন, সব তথ্য রয়েছে কেষ্টর কাছে। তাই তাঁকে জেরা করাটা জরুরি। তাঁরা জানতে চাইছেন, টিকিটের বিনিময়ে নগদ, কার মাধ্যমে কোথায় পৌঁছল? ইতিমধ্যেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠরা জেরায় গোরু পাচারের টাকা কোথায় কার কার কাছে রয়েছে, সেই ইতিবৃত্ত জানিয়ে গিয়েছেন। এই বিষয়ে অনুব্রতর জবাব চাইছেন তদন্তকারীরা। সম্প্রতি রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মধ্যে লটারি জেতার হিড়িক তাঁদের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়েও তদন্ত করছে ইডি-সিবিআই।

    Previous articleনটরাজ পূজা কমিটির রাস উৎসবে এবারের থিম ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’
    Next articleবিশ্ব ইতিহাসে ৬ নভেম্বর

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here