Home State 92 টা আসনে হাজারেরও কম ভোটে তৃণমূলের জয়? গণনায় কারচুপির আশঙ্কা বিজেপির!

92 টা আসনে হাজারেরও কম ভোটে তৃণমূলের জয়? গণনায় কারচুপির আশঙ্কা বিজেপির!

236
0

কুমার বিক্রমাদিত্য, কলকাতা: নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ ঘোষিত ফল অনুযায়ী রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭টি কেন্দ্রে জয়লাভ করেছে বিজেপি। আগের বিধানসভায় বিজেপির জয়ী বিধায়ক ছিল মাত্র তিনটি। অর্থাৎ রাজ্যব্যাপী পরিবর্তন মুখী হাওয়ায় বিজেপি অতিরিক্ত 74টি আসন বেশি পেয়েছে। একটি কেন্দ্রে আইএসএফ ও আরেকটি কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী জয়লাভ করেছে। আর তৃণমূল ২১৩টি আসনে জয় লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। কিন্তু, এই 213 টি আসনের 92 টি কেন্দ্রে অদ্ভুতভাবে তৃণমূল এক হাজারেরও কম ভোটে ব্যবধানে বিজেপিকে হারিয়ে জয়লাভ করেছে। রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাস ঘাঁটলে এই ন্যূনতম মার্জিন খুবই বিরল। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে, 92টা কেন্দ্রে কেন একই রকম ব্যবধান লক্ষ্য করা যাচ্ছে? তাহলে কি গণনায় কারচুপি করেছে শাসক দল? অন্যদিকে, অদ্ভুতভাবে এবারের নির্বাচনের ফলাফলে কংগ্রেস ও সিপিএম ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, জোটের প্রাপ্ত ভোট আশানুরূপ হয়নি। তাদের ভোটের মার্জিন বেশিরভাগ কেন্দ্রে 5 হাজারেরও নিচে নেমে গেছে।

92 টা আসনে তৃণমূল এই কয়েকশো ভোটের মার্জিনে জিতেছে, তার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কয়েকটি আসনে জোটের প্রার্থীও ছিল। প্রশ্ন উঠছে, শাসক এবং বিরোধী দলের লড়াইয়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে বেছে নিয়েছে মানুষ। তাই বলে ৫-১০ টি আসনও কি কংগ্রেস ও সিপিএম পেতে পারত না?
2021 বিধানসভার এই অস্বাভাবিক ফল নিয়ে বিজেপির মনে সন্দেহ ও রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। সেই সন্দেহ দানা বাঁধার মূল কারণ প্রিসাইডিং অফিসার ও কাউন্টিং এজেন্টদের ভাইরাল হওয়া কয়েকটি অডিও ক্লিপ ও মেসেজ। এই অডিও ক্লিপ ও মেসেজ যারা করেছেন তাঁরা গণনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একটি অডিও ক্লিপ সর্বাধিক ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বক্তা বলছেন কাউন্টিং এজেন্টের 5 লক্ষ টাকা করে দিয়ে তাদের কে কিনে নিয়েছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ আসছে গণনার সময় যেসব অফিসাররা যুক্ত ছিলেন তাঁদেরকেও বশ করেছে তৃণমূল। আর এই সুযোগ নিয়েই যেনতেন প্রকারে, বিজেপি ও অন্যান্য বিরোধী দলকে গণনায় ন্যূনতম ভোটে হারের মার্জিন দেখিয়েছে তাঁরা।

গণনায় কারচুপির প্রবণতা গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই বিতর্ক তৈরি করেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। সে সময় বিজেপির অভিযোগ ছিল, প্রথম গণনায় জিতে যাওয়া অধিকাংশ পঞ্চায়েতে জোরপূর্বক বার বার গণনা করে কারচুপি করেছে তৃণমূল। অনেক ক্ষেত্রে প্রথম গণনাতেই এই কারচুপির অভিযোগ এনেছে বিজেপি। বনগাঁ লোকসভার অধিকাংশ কেন্দ্রে এই ধরনের একাধিক অভিযোগ এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাকমুহুর্তে তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছিলেন, উত্তর 24 পরগনায় বিজেপি যদি একটি সিঙ্গল পঞ্চায়েত দখল করতে পারে, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। তখন প্রশ্ন উঠেছিল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সে সময় এতটা নিশ্চিত হয়েছিলেন কিভাবে? তাহলে কি তিনি আগে থেকেই গণনায় কারচুপি করার পূর্বপরিকল্পনা করে রেখেছিলেন? এ প্রসঙ্গে উল্লেখ রাখা প্রয়োজন, পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি কিন্তু সে সময় অনেক পঞ্চায়েতে জয়লাভ করেছিল প্রথম গণনাতে। কিন্তু জোরপূর্বক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নেতৃত্বে বারবার গণনা করিয়ে অধিকাংশ পঞ্চায়েত সদস্যদের হারিয়ে দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, পঞ্চায়েত ভোটে এই কারচুপির একটি নমুনা এখানে উল্লেখ করা হল। 2018 পঞ্চায়েত নির্বাচনে গাইঘাটা বিধানসভার সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রথম গণনায় 14 টি আসনে জয় লাভ করে বিজেপি। পরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের তৎপরতায় পুনরায় গণনা করা হয় সেই ব্যালট পেপার। সেখানে বারবার গণনা করে কারচুপি করে তৃণমূল। এভাবে বিজেপিকে 5টি আসনে হারিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে বিজেপি। এর ফলে সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে চলে যায়।

রহস্যজনকভাবে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের একাধিক নেতা বলেছেন, 2 তারিখ গণনার দিন দেখে নেব। বিজেপির ধারণা, এই দেখে নেওয়ার অর্থ আসলে তৃণমূল নেতাদের গণনায় কারচুপি করার পূর্ব পরিকল্পনা।

Previous articleহিংসার আবহে শপথ মমতার, শিয়রে কড়া নাড়ছে রাষ্ট্রপতি শাসন
Next articleস্বরূপনগরে বিজেপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, আগুন প্রার্থীর বাড়িতেও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here