কলকাতা: দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ১০ বছর! এই ক’বছরে সারদা চিটফান্ডের তদন্ত কোন জায়গায়, তা নিয়ে সাধারণ মানুষ অন্ধকারে। কিন্তু বন্দিজীবন থেকে রেহাই পাননি বেআইনি এই অর্থলগ্নি সংস্থার অন্যতম কর্ণধার দেবযানী মুখোপাধ্যায়। অবশেষে আগামী ৫ জুন তিনি বাড়ি ফিরছেন। তবে জামিন দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। মাত্র চার ঘণ্টার জন্য প্যারোলে ছাড়া পাচ্ছেন তিনি। বাড়িতে তাঁর মা অসুস্থ। সেজন্য মাকে দেখতে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে তিনি দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছেন। সম্প্রতি ওই সংশোধনাগার সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পুলিসি বন্দোবস্ত করার জন্য লালবাজারকে চিঠি পাঠিয়েছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর ২০১৩ সালের এপ্রিল নাগাদ কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে যান সংস্থার দুই কর্ণধার সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়। ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল তাঁদের দু’জনকেই কাশ্মীর থেকে গ্রেপ্তার করে বিধাননগর কমিশনারেট। পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সারদার নগদ টাকার রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয় দেখভাল করতেন দেবযানী। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন প্রভাবশালীরাও।
সূত্রের খবর, দেবযানী এতদিন সংশোধনাগারের ফোন ব্যবহার করেই মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন। সম্প্রতি তাঁর মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। দেবযানীর আইনজীবী অভিজিৎ বল জানান, মেয়েকে এভাবে কারাগারের ভিতরে দেখতে পারছেন না মা। ভিডিও কল করলেই তাঁর মা উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন। তারপর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাই মাকে দেখতে চেয়ে প্রথমবার সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কাছে প্যারোলের আবেদন করেন দেবযানী। পাশাপাশি আদালতেও আর্জি জানানো হয়।
এমনকী, দেবযানীর মা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ভিডিও কলে দু’জনের কথা বলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। অভিজিৎবাবু আরও জানান, এই আবেদন বিচার ভবনের বিশেষ সিবিআই আদালতের কাছেও করা হয়েছিল। তা মঞ্জুর হয়েছে। তারপরই ৫ জুন তাঁকে প্যারোলে ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এই নথি জেল কর্তৃপক্ষকে তাঁরা পাঠিয়েও দিয়েছেন। তারপরই জেলের তরফে পুলিসি নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে লালবাজারে। ওই দিন পুলিসি প্রহরায় তাঁকে তাঁর ঢাকুরিয়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।