কুমার বিক্রমাদিত্য, নন্দীগ্রাম: হুইল চেয়ারে চড়ে ব্যান্ডেজ করা পা দেখিয়ে মমতার ভোটপ্রচার প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের ‘বারমুডা’ বিতর্কের পর এবার মুখ খুললেন শুভেন্দু অধিকারী।
কার্যত তাঁর সরকারের দু্র্নীতিকে ধামা চাপা দিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে চাইছেন। তিনি ভোটে মানুষের সহানুভূতি আদায় করার জন্যই পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে সরাসরি অভিযোগ করলেন শুভেন্দু।
সোমবার নন্দীগ্রামে ভোটপ্রচারে গিয়ে মমতা নাম না করে শুভেন্দুকে একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকেন। তাঁর পা জখম হওয়ার জন্য শুভেন্দুকেই দায়ী করেন। বলেন, ‘ওর নির্দেশ ছাড়া এই কাজ আর কেউ করতে পারেনা। প্রত্যুত্তরে শুভেন্দু বলেন, পায়ে কিছুই নেই, ক্রেপ ব্যাণ্ডেজ বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানুষ এইসব মিথ্যাচার ধরে ফেলেছে। তাঁর শাসনকালে রাজ্যে কোনও উন্নয়ন হয়নি। মানুষকে কাজ দিতে পারেননি, শিল্প হয়নি, সে বিষয়ও উল্লেখ করেন তাঁর একসময়ের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর। শুভেন্দু স্পষ্টভাবে বলেন, তিনি হারের ভয়েই এই নাটক করছেন। পুরোটাই ফোর টুয়েন্টি ব্যাপার বলে উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে সোমবারের পর মঙ্গলবারেও ভোটপ্রচার করেন মমতা। পাল্টা বিজেপিও সমস্ত মেদিনীপুর জুড়ে মেগা প্রচার করেন। খড়্গপুরে হিরণের কেন্দ্রে প্রচারে অংশ নেন মিঠুন। সেখানে ব্যাপক সাড়া পড়ে। আর নন্দীগ্রামে স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ করেন মেগা রোড শো। কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করতে শুরু করেন তাঁর মিছিলে।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামের বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিয়ে হলদিয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দেন মমতা। এরপর ফের নন্দীগ্রামে ফিরে এসে গাড়িতে রোড শো করেন। এই সময় এখানকার বিরুলিয়ায় গাড়ির পাদানিতে দাঁড়িয়ে জনসংযোগের সময় গাড়ির দরজার আঘাতে তার পায়ে চোট লাগে। সেজন্য তিনি সোজা কলকাতায় এসে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করান। সেই চিকিৎসার রিপোর্ট আজও প্রকাশ্যে আনেনি তৃণমূল সরকার। অথচ মমতা রাজ্য জুড়ে ভোট প্রচারে পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে হুইল চেয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রকাশ্য সভায় তিনি শাড়ি সরিয়ে পায়ের ব্যান্ডেজ দেখাচ্ছেন। সেজন্য তাঁর পায়ের আঘাত কতটা গুরুতর তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। সেই চোট এখনও আছে কিনা তা নিয়ে রাজ্যের মানুষের মনে দানা বাঁধছে নানা সন্দেহ।
এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আমফান, কাটমানি, চিটফান্ড সহ একের পর দু্র্নীতিতে মমতা ও তৃণমূলের প্রতি মানুষের জনসমর্থন ক্রমশ তলানিতে। গত লোকসভা ভোটে ১৮টি আসনে বিজেপির সাফল্য তারই প্রমাণ। রাজ্যের মানুষ মুখ ফুরিয়ে নিয়েছে তাঁর সরকার ও দল থেকে। এজন্য ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই পায়ে ব্যান্ডেজ পরে ভোট প্রচার করে মানুষের সহানুভূতি কুড়াতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী।