Home State ভোটে উস্কানিমূলক বক্তব্য, মমতাকে শাস্তি দিল নির্বাচন কমিশন

ভোটে উস্কানিমূলক বক্তব্য, মমতাকে শাস্তি দিল নির্বাচন কমিশন

246
0
নন্দীগ্রামের জনতার রায় নিলেন মমতা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্বাচনী প্রচারে একের পর এক উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জোর সমঝে দিল নির্বাচন কমিশন। আজ সোমবার রাত ৮টা থেকে আগামীকাল রাত ৮টা অবধি তাঁর ভোট প্রচারে নিষেধ আরোপ করল কমিশন। এই সময়ে তিনি দলের কোনও প্রচার কাজ করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই তিনি ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়াকড়ি প্রসঙ্গে বিষোদগার করেন। বেশ কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ আনেন কমিশন ও বাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রশ্ন তোলা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে। তাঁর অভিযোগ ছিল, নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করছে। মানুষকে ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই অজুহাত দেখিয়ে তিনি দলের কর্মীদের বারবার বলেন, ‘যদি ভোটদানে বাধা দেয়, তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একদল মহিলা ঘিরে রাখবে, আর একদল ভোট দিয়ে আসবে।’ এই উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর মমতার বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ জানায় বিজেপি। তারা অভিযোগ করেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে মমতা তাঁর দলের লোককে হিংসা ও ছাপ্পা মারার জন্য উস্কানি দিচ্ছেন। এরপর পরিপ্রেক্ষিতে মমতাকে শোকজ নোটিস পাঠায় কমিশন। তাতে তিনি বিন্দুমাত্র দমেননি। নোটিসে তৃণমূল সুপ্রিমোর জবাবেও সন্তুষ্ট হয়নি কমিশন। এমনকি প্রচার সভায় শোকজ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। তিনি একটি প্রচার সভায় বলেন, ‘আমাকে একশোবার নোটিস পাঠালেও আমি একই কথা বলব।’
এরপর শনিবারের ভোটে শীতলকুচির ১২৬ ও ২৮৫ নং বুথে হিংসা মাথাচাড়া দেয়। এই দুই বুথে ঘটে যায় ৫টি মৃত্যুর ঘটনা। প্রথম মৃত্যুটি হয় সকালে। লালবাজার পঞ্চায়েতের পাঠানটুলির ২৮৫ বুথের নতুন ভোটার ও বিজেপি সমর্থক আনন্দ বর্মনকে ভোটের লাইনেই খুন করে একদল দুষ্কৃতি। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরাই তাকে খুন করেছে। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এরপর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে জোরপাটকির ১২৬ নং বুথে। এই বুথের ৮০০ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৬০০ মুসলিম ভোটার। বাকি ২০০ হিন্দু। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শীতলকুচিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পোলিং অফিসার জানান, ভোটের আগের দিন সন্ধ্যা থেকে হিন্দু ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানো শুরু হয়। ভোটের দিন হিন্দু ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেয় তৃণমুলের গুন্ডাবাহিনী। বুথে বসতেও বাধা দেওয়া হয়। সে সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী সক্রিয় হয়ে উঠলে প্রায় দুই শত লোক তাদের ঘিরে ধরে আক্রমণ করে। এমনকি তাদের আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ঢাল বানানো হয় মহিলা ও শিশুদের। দা, বটি ইত্যাদি ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ চালানো হয়। কমিশন জানায়, এই পরিস্থিতিতে সরকারি সম্পত্তি, ভোটকর্মী ও নিজেদের আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয় নিরাপত্তা বাহিনী। গুলিতে মৃত্যু হয় 4 জনের। এই ঘটনার জন্য মমতার একের পর এক উস্কানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করে বিজেপি। প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। এদিকে কমিশনও মমতার উস্কানিমূলক বক্তব্যে লাগাম টানতে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। যার শাস্তিস্বরূপ আজ কমিশন মমতার প্রচারে ২৪ ঘণ্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু, এতেও দমবার পাত্রী নন তৃণমূল নেত্রী। তিনি আগামীকাল কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরণায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Previous articleযাদবপুরের ভোটপ্রচারে বাঁশি বাজিয়ে বৃষ্টি নামাচ্ছেন ‘কলকাতার তানসেন’
Next articleকরোনা ঠেকাতে ফের ১৫ দিনের জনতা কারফিউ মহারাষ্ট্রে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here