দীননাথ চক্রবর্তী
ফুলের পাপড়িতে পাপড়িতে বৈশাখ রাজনন্দিনী ।সকলের মধ্যে আলাদা করে তাকে চিনে নিতে অসুবিধা হয়না এতটুকু ।রোদের খামে ভরা চিঠিতে কাঁঠাল চাঁপার তেজোদীপ্ত বৈরাগ্য । জীবনের যে কথাগুলো বিশেষভাবে জরুরী ,যে গল্পগুলো অমৃত সুধার ধারক ও বাহক ,প্রতিটি পাপড়িতে যেন তারই আবেগ আর বেশী বেশী করে আদর । মৌমাছি যে সুরটি তার বুকে রেখেগিয়েছিল ,গায়িত্রী মন্ত্রের নির্যাস সেটি । মাটির ওষ্ঠ ছুয়ে বেলের বুকে কখন যেন নেমে আসে আকাশ । রাশি রাশি স্তূপ মেঘ। প্রতিটি বেল ফুলের মধ্যে স্বপ্নের কালিতে লেখা আকাশপরীর আত্মকথা ।এখন নাগালের মধ্যে । আপন কোলের মধ্যে আকাশ মাথা রাখে। বেলই মাটির আকাশ । আর যুঁই যেন নিশি রাতের নক্ষত্র । বুভুক্ষ মনের থালা কখন ভরে যায় গরম ভাতে। উপোসী মনের যন্ত্রণা আর থাকেনা । প্রকৃতির ঘন কালো বেণীতেই বেল যুঁই এর স্বার্থকতা। আজ বেশী বেশী করে বুঝতে পারি নারীর কেশে বেল যুঁই এর রোমান্টিকতার অর্থ । একটা অন্যরকম মেদুরতা। গন্ধরাজ বৈশাখী সন্ধিবেলার রোমাঞ্চ রঙিন শিহরণ ।চাপা আগুন । অনিন্দ্য স্নিগ্ধ সরলতায় চোপানো স্মিত হাসি । ডাগর দুটি চোখের অনেক না বলা কথার হৃদয় উপত্যকা । যত কুঁড়িরা সব কথা হয়ে পাপড়ি মেলে ধরে। মৌমাছিরা পাখা ভর্তি করে নিয়ে আসে থোকা থোকা কালবৈশাখী । কতদূর. কতদূর যেন চলে যাই । বড্ড চেনা তবুও চিরকালীন অচেনা রূপকথার দেশে। আমার মাঝে তখন রূপকথার রাজকুমার । মনে উদগ্র রাজকুমারীকে উদ্ধারের বায়না ।তখন হৃদয় জুড়ে রাতের রজনীগন্ধা । বড্ড অভিমানী । জ্যোৎস্নার মতো চুঁয়ে চুঁয়ে পড়ে সে অভিমান ।তাতেই এক রোমান্সের আলোতে মায়াবী হয়ে ওঠে আঁধার । স্নিগ্ধ শুভ্র আলোর গুঁড়ো দিয়ে তৈরী বকুল নিশ্চিতভাবে বৈশাখী বাউল । বৈশাখী বৈরাগ্যের আত্মমগ্নতা।