মেদিনীপুর: কুর্মিদের আন্দোলনকে বিচ্ছিন্নতাবাদী খলিস্তানিদের সঙ্গে তুলনা করে দলকে বড়সড় অস্বস্তিতে ফেললেন তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তাঁর এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অজিত মাইতি যেটা বলেছেন, সেটা আমারও খুব খারাপ লেগেছে। আমি ওঁকে ফোন করেছিলাম। ওঁর বক্তব্য আমাদের বক্তব্য নয়। আমরা কুর্মি সম্প্রদায়, আদিবাসীদের খুব ভালোবাসি। যদি অজিত মাইতির কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তাহলে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’ অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়ে অজিত মাইতিও তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
অজিতের মন্তব্যের জেরে জঙ্গলমহলে কুর্মিদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ে। শুরু হয় বিক্ষোভ। শালবনীতে অজিতের কুশপুতুল দাহ করেন কুর্মিরা। পাশাপাশি সোমবার সকালে মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতর বাড়ির সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান কুর্মিরা।
উল্লেখ্য, এসটি তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি পূরণ না হওয়ায় সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কুর্মিরা। ঘাঘর ঘেরা কমিটির তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, কুর্মি গ্রামে রাজনৈতিক নেতারা নির্বাচনী প্রচারে গেলে ‘ঘাঘর ঘেরা’ করা হবে। কুর্মিদের দেওয়ালে রাজনৈতিক দেওয়াল লিখনও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারই পাল্টা হিসাবে শনিবার কুর্মিদের নিশানা করেন অজিত মাইতি। অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি উপলক্ষ্যে দলের জনপ্রতিনিধি ও পদাধিকারীদের নিয়ে গত শনিবার সাধারণ সভার আয়োজন করে তৃণমূল।
সেখানে অজিত বলেন, ‘কিছু স্বঘোষিত কুর্মি নেতা খলিস্তানি নেতাদের মতো কুর্মি ভাইবোনেদের ভুল বোঝাচ্ছেন। আমার ধারণা বিজেপি-সিপিএম তাদের উস্কানি দিচ্ছে।’ অজিতের এই মন্তব্যের পরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অজিতের মন্তব্যের বিরোধিতা করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘এটি বিধায়কের ব্যক্তিগত মন্তব্য। এধরনের মন্তব্য দল সমর্থন করে না। কুর্মিদের উন্নয়নের জন্য সবরকম চেষ্টা করবে দল।’ পরে এনিয়ে ক্ষমা চান অজিত মাইতি। তিনি বলেন, ‘আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমার মন্তব্য কুর্মিদের আঘাত করেছে, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন।’