নয়াদিল্লি: নিজেদের একক শক্তি যেখানে বেশি সেরকম ১৬টি রাজ্যে লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি। বিরোধীদের প্রচার ও প্রস্তুতিতে টেক্কা দিতেই এই ঘোষণা। শনিবার প্রথম দফায় ১৯৫ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। লক্ষ্যণীয় ঠিক সেই রাজ্যগুলিতেই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে বিজেপিকে অন্য দলের মুখাপেক্ষী হতে হবে না।
যে রাজ্যগুলিতে বিজেপির জোট শরিকের প্রয়োজন অথবা ইতিমধ্যে এনডিএ জোট রয়েছে সেগুলির প্রার্থী তালিকা চুড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। কারণটা স্পষ্ট। প্রথমত আসন সমঝোতার টানাপোড়েন এবং দ্বিতীয়ত নতুন জোট শরিক পাওয়ার আশা। মহারাষ্ট্র, বিহার, কর্ণাটকের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে শনিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারেনি বিজেপি। বিজেপির প্রার্থী তালিকায় অবশ্য তেমন কোনও চমক নেই। বারাণসী থেকে নরেন্দ্র মোদি, লখনউ থেকে রাজনাথ সিং, আমেথি থেকে স্মৃতি ইরানি, গুনা থেকে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, মথুরায় হেমা মালিনী, কোটায় লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। এমনকী বাংলার ২০ আসনও। কিছু ক্ষেত্রে বর্তমান এমপিকে সরিয়ে নতুন মুখ আনা হয়েছে। আবার পরিবারতন্ত্রের ঘোরতর বিরোধী মোদি সুষমা স্বরাজের অরাজনৈতিক কন্যা বাঁশুরী স্বরাজকেও দিল্লিতে প্রার্থী করেছেন। দক্ষিণ ভারতের কেরলের একটি লোকসভা কেন্দ্র হতে চলেছে গোটা দেশের কাছে বিশেষ আকর্ষণের। তিরুবনন্তপুরমে বিজেপি প্রার্থী করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরকে। কংগ্রেসের একাধিকবারের জনপ্রিয় এমপি শশী থারুরকে পরাস্ত করতে বিজেপির বাজি রাজীব চন্দ্রশেখর। পশ্চিম ত্রিপুরা আসনে বিজেপি প্রার্থী করেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে। অর্থাৎ টিকিট পেলেন না মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক।
একদিকে যেমন সর্বাগ্রে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা শুরু করে বিজেপি বাকিদের টেক্কা দিতে চেয়েছে, তেমনই আবার ভোটের আগে একের পর এক অস্বস্তিও আসছে। এদিনই হাজারিবাগের এমপি জয়ন্ত সিনহা এবং পূর্ব দিল্লির গৌতম গম্ভীর জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা আর এমপি হবেন না। রাজনীতি থেকেও বিদায় নেবেন। হাজারিবাগে অবশ্য দেখা গেল জয়ন্ত সিনহাকে প্রার্থী করাও হয়নি। অর্থাৎ আভাস পেয়েই তিনি সকালে সরে দাঁড়ানোর বার্তা দেন। পাশাপাশি জোরদার গুঞ্জন ছিল পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর থেকে বিজেপি প্রার্থী হবেন ক্রিকেটার যুবরাজ সিং। কিন্তু যুবরাজ শনিবার জানিয়েছেন, তিনি প্রার্থী হবেন না। আমেথি থেকে স্মৃতি ইরানি প্রার্থী হলেও রায়বেরিলির প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। এই কেন্দ্র থেকে প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী হতে পারেন, এই জল্পনা তুঙ্গে কংগ্রেসের অন্দরে। যদি সেই জল্পনা সত্য হয়, তাঁর প্রতিপক্ষ কে হবেন?
প্রথম দফায় প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন, ৩৪ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। লোকসভা স্পিকার। দুই মুখ্যমন্ত্রী। ২৮ মহিলা। তফসিলি জাতির প্রার্থীর সংখ্যা ২৭। রাহুল গান্ধীর জেহাদ শুরু হয়েছে দেশে জাতিভিত্তিক গণনা নিয়ে। বিজেপি তাই প্রথম দফাতেই ৫৭ জন ওবিসি প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সিংহভাগ আসেন প্রার্থী ঘোষণা বাকি। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারত ও পূর্ব ভারত নিয়ে বিজেপি যে বেশ উদ্বিগ্ন তার প্রতিফলন স্পষ্ট। সার্বিক প্রার্থী বাছাই পূর্ব ও দক্ষিণ থেকে করা হয়নি এখনও।