কলকাতা: তবে কি ‘সর্ষের মধ্যেই ভূত’? খোদ ভারতীয় সেনায় কাজ করছেন দু’জন পাকিস্তানি নাগরিক? তাও আবার কাছেই বারাকপুর সেনা ছাউনিতে! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জড়িত থাকতে পারে। ভারতীয় সেনায় পাকিস্তানের নাগরিকদের ঢোকানো তাদের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়। মঙ্গলবার মামলার শুনানি শেষে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকার, ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) এবং সিবিআইকে যুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা।
হুগলির ত্রিবেণীর মগরা থানা এলাকার বাসিন্দা তথা মামলাকারী বিষ্ণু চৌধুরীর অভিযোগ, ভারতীয় সেনায় একটি বড়সড় অসাধু চক্র সক্রিয়। তাদের কাজ হল নাগরিকত্ব সহ যাবতীয় নথি জাল করে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতীয় সেনায় নিয়োগ পাইয়ে দেওয়া। মোটা টাকার বিনিময়ে সেনায় চাকরি বিক্রি হচ্ছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি। এরপরই তাঁর অভিযোগ, বর্তমানে বারাকপুর সেনা ছাউনিতে জয়কান্ত কুমার এবং প্রদ্যুম্ন কুমার নামে পাকিস্তানের দুই নাগরিক কর্মরত। দু’জনই পাকিস্তান থেকে এসে ওই চক্রের মাধ্যমে নথি জাল করে কেন্দ্রীয় সরকারের স্টাফ সিলেকশন কমিশনের (এসএসসি জিডি) পরীক্ষার মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পেয়েছেন।
কীভাবে কাজ করে এই চক্র? বিষ্ণুবাবুই বা কীভাবে এই চক্রের হদিশ পেলেন? মামলার বয়ানে তিনি উল্লেখ করেছেন, এসএসসি জিডি’র পরীক্ষায় বসতে গেলে বাসস্থানের প্রমাণ, জাতিগত শংসাপত্র সহ একাধিক নথি প্রয়োজন হয়। এই পরীক্ষায় উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে ‘কাট অফ মার্কস’ যথেষ্ট কম। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে যা ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করে, অন্য রাজ্যে সেটাই বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশে। তাই পাকিস্তানি নাগরিকদের সেনায় ঢোকাতে এই রাজ্যকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে তিনি এই চক্রের খোঁজ পান।