ঢাকা: নুপুর শর্মার মন্তব্যের আঁচ পড়ল এবার বাংলাদেশে। ১৮ জুন পুলিশের সামনেই জুতার মালা পরানো হয় নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায়। অধ্যাপকের এই অবমাননার বিরুদ্ধে সরব হয় দেশের মানবাধিকার কমিশন। জানা গিয়েছে, দেশের এক সংখ্যালঘু কলেজ ছাত্র নুপুর শর্মাকে সমর্থন করে সোশ্যালে পোস্ট করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় ওই ছাত্রের সহপাঠীরা। তাঁকে সোশ্যাল থেকে ওই পোস্টটি মুছে ফেলতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই ছাত্র সহপাঠীদের এই নির্দেশ মানেনি। এই নিয়ে কলেজে ঝামেলা শুরু হয়। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠলে তাঁকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে রক্ষায় পুলিশ ডাকেন স্বপন কুমার বিশ্বাস। আক্রমণকারী ছাত্রদের অভিযোগ, ওই অধ্যাপক হিন্দু ছাত্রটিকে সমর্থন করে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু, পুলিশ এসে কোনও সক্রিয়তা দেখায়নি বলে অভিযোগ। উল্টে পুলিশের সামনে জুতোর মালা পরিয়ে অধ্যাপককে চরম হেনস্থা করা হয়। উত্তেজিত ছাত্ররা অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এই নিয়ে তোলপাড় হয়েছে গোটা দেশ। সরব হয়েছে সেদেশের বুদ্ধিজীবী ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ।
এই ঘটনায় পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছে দেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশন কর্তব্যরত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে খুলনার বিভাগীয় কমিশনারকে। কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম আজ মঙ্গলবার এই নির্দেশনামা জারি করেছেন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনা ওই অধ্যক্ষের মানবিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে। কমিশন পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশনায় একথা বলা হয়েছে। ওই ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের দাবি জানিয়েছে।