প্যারিস: রবিবার ফরাসি সাহিত্যিক ডোমিনিক ল্যাপিয়র প্রয়াত। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত কারণে জীবনাবসান হয়েছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। ভারতের পটভূমিকায় লেখা ‘সিটি অব জয়’, ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট’-এর মতো বই তাঁকে বিশ্বের পাশাপাশি এদেশেও জনপ্রিয় করে তোলে। এই সাহিত্য কর্মের জন্য ২০০৮ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে। ডোমিনিকের জন্ম ১৯৩১ সালের ৩০ জুলাই। তাঁর জন্মস্থান ফ্রান্স।
তাঁর অন্যতম প্রিয় বন্ধু ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নামজাদা সাহিত্যিক ল্যারি কলিন্স। তিনি যৌথভাবে ৬টি বই লিখেছিলেন সাহিত্যিক ল্যারির সঙ্গে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় লেখা ‘ইজ প্যারিস বার্নিং’ এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বইটি ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় সিনেমাও।
এছাড়াও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ‘ও জেরুজালেম’, ‘দ্য ফিফথ হর্সম্যান’, ‘ইজ নিউ ইয়র্ক বার্নিং’। অবশ্য কলকাতার পটভূমিকায় লেখা ‘সিটি অব জয়’ (ফরাসিতে ‘লা সিটি ডে লা জোয়ে’) উপন্যাসের জন্য তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠেন। এই উপন্যাসের ঘটনাপ্রবাহ এক পোলিশ ধর্মযাজক, এক মার্কিন চিকিৎসক ও এক বাঙালি রিকশচালককে ঘিরে আবর্তিত হয় । পরিচালক রোনাল্ড জফ তাঁর এই উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে ১৯৯২ সালে একটি সিনেমাও নির্মাণ করেন।
ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে জঁভিয়ে মোরোর সঙ্গে যৌথভাবে তিনি একটি বই লেখেন। যার নাম ‘ফাইভ পাস্ট মিডনাইট ইন ভোপাল’। পরবর্তী সময়ে ভারতের নানা মানবিক প্রকল্পের জন্য তাঁর এই বই থেকে রয়্যালটি বাবদ পাওয়া অর্থের বড় অংশ দান করেন। রয়্যালটির একটি অংশ স্থানীয় সম্ভাবনা ক্লিনিকে দান করেন ভোপালে আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য।
এবিষয়ে তিনি ২০০৫ সালে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকারে ডোমিনিক বলেন, এই ধরনের মানবিক কাজ করা সম্ভব হয়েছে পাঠকদের সহায়তার জন্যই। তাঁর এই মহানুভবতার ফলে ভোপালে গত ২৪ বছরে ১০ লক্ষ টিবি রোগী চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ন’হাজার শিশুর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়েছে।
প্রয়াত সিটি অব জয়-এর লেখক ডোমিনিক ল্যাপিয়র
ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে জঁভিয়ে মোরোর সঙ্গে যৌথভাবে তিনি একটি বই লেখেন। যার নাম ‘ফাইভ পাস্ট মিডনাইট ইন ভোপাল’।