প্রমাণ হল গাছেরাও কথা বলে

    34
    0

    নয়াদিল্লি: আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রমাণ করেছিলেন, গাছেরও প্রাণ আছে। তাদের অনুভূতি শক্তি রয়েছে। কিন্তু, গাছেরা কি কথা বলতে পারে? এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন রয়েছে মানুষের মনে। আর এ বিষয়েই সম্প্রতি আলোকপাত করেছেন জাপানের একদল বিজ্ঞানী। তাঁরা দেখিয়েছেন, গাছেরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে পারে। বার্তা পাঠাতে পারে। তাঁদের এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার প্রকাশ্যে আসতে স্বভাবতই রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গাছেদের পরস্পরের মধ্যে ‘কথা বলা’-র রিয়েল টাইম ফুটেজ  রেকর্ড করেছেন গবেষকরা। ‘সায়েন্স অ্যালার্ট’ জানিয়েছে, বাতাসে ভাসমান যৌগগুলি উদ্ভিদকে সূক্ষ্ম কুয়াশার মতো ঘিরে থাকে। এই যৌগগুলিই যোগাযোগ রক্ষার কাজে সাহায্য করে। এই যৌগগুলি গন্ধের মতো এবং নিকটবর্তী গাছপালাকে তারা সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়। উদ্ভিদ জগৎ কীভাবে এই ‘এরিয়াল অ্যালার্ম’ গ্রহণ করে এবং তাতে প্রতিক্রিয়া জানায়, সেই সংক্রান্ত ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন জাপানী বিজ্ঞানীরা। সাইতামা বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকিউলার বায়োলজিস্ট মাসাতসুগু টয়োটার নেতৃত্বে এই উল্লেখযোগ্য গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ নামক জার্নালে। 

    দলটি পর্যবেক্ষণ করেছে যে, কীটপতঙ্গ বা অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্ভিদের নির্গত উদ্বায়ী জৈব যৌগগুলি (ভোলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড বা ভিওসি) নিয়ে কীভাবে একটি অক্ষত উদ্ভিদ প্রতিক্রিয়া জানায়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গাছপালা যান্ত্রিকভাবে বা কীটপতঙ্গ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত উদ্ভিদের থেকে নির্গত ‘ভিওসি’ অনুভব করে এবং নিজেদের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে সাড়া দেয়। গাছেদের মধ্যে এই ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিবশেগত সমস্যা বা চ্যালেঞ্জের থেকে তাদের রক্ষা করে। 

    উদ্ভিদের মধ্যে এই যোগাযোগ প্রমাণের জন্য ‘এয়ার পাম্প’ যুক্ত একটি বাক্সে রাখা হয়েছিল পাতা আর শুঁয়োপোকা। অপর একটি বাক্সে ছিল সরিষা পরিবারের অন্তর্গত সাধারণ আগাছা অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা। শুঁয়োপোকাগুলিকে টমেটো গাছ এবং অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা থেকে কাটা পাতা খেতে দেওয়া হয়। গবেষকদের চোখে ধরা পড়েছে অন্য বাক্সে পোকা-মুক্ত অবস্থায় রাখা অ্যারাবিডোপসিসে আসা বিপদ সঙ্কেত। এক্ষেত্রে তাঁরা একটি বায়োসেন্সর ব্যবহার করেছিলেন, যা সবুজ হয়ে ওঠে এবং ক্যালসিয়াম আয়নকে শনাক্ত করে। মানুষের কোষেও যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এই ধরনের ক্যালসিয়াম সিগনালিং ব্যবহৃত হয়। টয়োটা বলেছেন, গাছপালা কখন, কোথায় এবং কীভাবে তাদের আক্রান্ত প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বায়ুবাহিত ‘সতর্ক বার্তা’-তে সাড়া দেয়, তার জটিল প্রক্রিয়া তাঁরা আবিষ্কার করতে পেরেছেন। বায়ুবাহিত যৌগগুলিকে বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দু’টি যৌগের সন্ধান পেয়েছেন। সেগুলি হল ‘জেড-থ্রি-হ্যাল’ এবং ‘ই-টু-হ্যাল’। 

    Previous articleসংসদ ভবনের নিরাপত্তায় ১৪০ জন সিআইএসএফ
    Next articleভাইদের দিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ ও খুন, ফেরার স্বামী

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here