অরবিন্দ সরকার
বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
বৈদিক যুগ থেকেই গুরু শিষ্য পরম্পরায় গুরুগৃহে পাঠদান চলতো। পরবর্তীতে পাঠশালায় পণ্ডিতমশাই ছাত্র তৈরীর দায়িত্ব নেন। তার পরে শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নের ফলে বহুমুখী শিক্ষার বিস্তার ঘটে।হাতে কলমে, পাঠে, শিল্প, কারিগরি প্রশিক্ষণ নানাবিধ শাখা প্রশাখার মাধ্যমে ডানা মেলে সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস , ভূগোল, গণিতের পাশাপাশি বহুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৬০ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ বহরমপুরে কৃষ্ণনাথ কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে আসেন। রাধাকৃষ্ণণের বাবা চেয়েছিলেন ছেলে তাদের পুরোহিত হোক। কিন্তু তিনি কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা অভাবের মধ্যেও অদম্য মনোবলে উচ্চ শিক্ষা শেষ করেছিলেন। দানশীল রাজা মনীন্দ্র চন্দ্র নন্দীর আবেদনে এসেছিলেন তিনি। মনীন্দ্র চন্দ্র নন্দী বিভিন্ন সময়ে রাধাকৃষ্ণণকে অর্থ সাহায্য করেছিলেন। তাই তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারেন নি। বহরমপুর টেক্সটাইল কলেজেও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।ঐসময় বহরমপুরের পৌরসভার পৌরপিতা শ্রীপদ ভট্টাচার্য ছিলেন। তিনি রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানালেন। রাষ্ট্রপতি পৌরসভায় গেলে কৃষ্ণনাথ কলেজের বামপন্থী ছাত্রছাত্রীরা একটি স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য যান।পৌরপিতা যেহেতু কংগ্রেস তাই তিনি ছাত্রছাত্রীদের স্মারকলিপি দিতে দেবেন না। এই নিয়ে তুমুল বাকবিতণ্ডা ও শ্লোগানে পৌরসভা অচলাবস্থা ঘটে। ধস্তাধস্তি পুলিশের সঙ্গে শুরু হলে রাষ্ট্রপতি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মিলিত হবার জন্য তাদের সামনে আসেন। তখন ছাত্র ছাত্রীরা তাঁর জন্মদিন পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করে। রাষ্ট্রপতি তখন বলেন , শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড ,তাই এদিনটি যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয় তাহলে আমার আপত্তি নাই। এর পর পরের বৎসর থেকে ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এরপর উনাকে ২০ সেরা বিশাল মিষ্টান্ন উপহার দেওয়া হয় ভারতবর্ষ নামাঙ্কিত।