নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: চার দিন ধরে টানটান উত্তেজনা আর কৌতূহলের পর অবশেষে পঞ্চম দিনের মাথায় জামিনের শুনানি অমীমাংসিত থেকে গেল। জামিন নিয়ে দুই বিচারপতির মধ্যে তৈরি হলো ভিন্ন মত। একজন জামিনের পক্ষে আরেকজন বিপক্ষে। তাই আপাতত গৃহবন্দি হলেন নারদ মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের চার নেতা ও মন্ত্রী। তবে তাঁরা গৃহবন্দী থাকাকালীন আদালতের অনেক বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে এই হেভিওয়েট নেতাদের। এদিকে অমীমাংসিত জামিনের শুনানি ফের শুরু হতে পারে আগামী সোমবার। এজন্য গঠন করা হয়েছে 5 বিচারপতির একটি ডিভিশন বেঞ্চ। গ্রেপ্তার হওয়া নেতা ও মন্ত্রীরা গৃহবন্দি অবস্থায় তাঁরা সমস্ত প্রশাসনিক কাজ অনলাইনে করতে পারবেন। যদি কেউ অভিযুক্তদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন, তাহলে তাঁর বিস্তারিত বিবরণ নথিভুক্ত করে রাখতে হবে। বাড়ির সামনে রাখতে হবে সিসিটিভি। কোন সরকারি আধিকারিক দেখা করতে পারবেন না। ভার্চুয়ালে করতে হবে প্রশাসনিক বৈঠক। এছাড়া অন্য কোনও কাজের ক্ষেত্রে এই ভিডিও কনফারেন্স করা যাবে না। রেকর্ড করে রাখতে হবে ভিডিও কনফারেন্স এর বিস্তারিত তথ্য। কোন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা যাবে না।
সেই জন্য শুক্রবার আদালতের এই রায়ের পর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম চেতলার বাড়িতে ফিরলেও আদালতের নির্দেশ মতো কোনো সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নি। এতদিন যে ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছেন। সেই ববি হাকিম একেবারে চুপচাপ বাড়ি ফিরলেন। মুখে টু শব্দটিও করলেন না। এদিকে বাড়ি ফিরেই ঘূর্ণি ঝড় যশ ও কভিদ পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সের অপরপ্রান্তে ছিলেন পুরো আধিকারিকরা। এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে সহযোগিতা করেন তাঁর বড় ও মেজো মেয়ে।
এদিকে ববি হাকিম বাড়ি ফিরলেও বাকি তিন নেতা ও মন্ত্রী এখনই ফিরছেন না বলে সূত্রের খবর। কারণ তাঁরা অফিশিয়ালি অসুস্থতা দেখিয়েছেন। সুতরাং উডবার্ন থেকে চিকিৎসকরা সুস্থতার সার্টিফিকেট দিলে তবে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন। যদিও রায় ঘোষণার পর ভাইরাল হওয়া একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মদন, শোভন ও বৈশাখী চাদর মুড়ি দিয়ে সুস্থ মানুষের মত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের 102 নম্বর কেবিন থেকে বেরিয়ে আসছেন। যখন তাঁরা বুঝতে পারেন, সামনে সিসিটিভি রয়েছে, তখন আলো নিভিয়ে দেন নিজেদের সুস্থতা আড়াল করার জন্য। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এই তিন নেতা ও মন্ত্রী আদৌ অসুস্থ নন? জেলের ঘানি থেকে বাঁচার জন্যই জামিন পেতে তাঁরা অসুস্থতার ভান করেছেন? বিতর্ক কিন্তু থামছে না।