Home National দেশি খাদ্যাভ্যাসই কোভিডের মৃত্যু রুখেছে

দেশি খাদ্যাভ্যাসই কোভিডের মৃত্যু রুখেছে

83
0

কলকাতা: সর্বাধিক জনঘনত্ব হওয়া সত্ত্বেও ভারতীয়দের কোভিডে মৃত্যুহার তুলনামূলক কম ছিল। এর কারণ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীরা মনে করছিলেন, ভারতীয়দের স্বতন্ত্র খাদ্যাভ্যাসই কোভিডে মৃত্যু ঠেকাতে সহায়ক হয়েছে। এবার বৈজ্ঞানিক তথ্য সহ এই দাবি প্রকাশিত হল একটি গবেষণাপত্রে। উত্তর ভারতের হরিয়ানা এবং দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকের কোভিড রোগীদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন ভারত তথা বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীরা। গবেষণা থেকে স্পষ্ট, ভারতীয়দের চিরাচরিত খাদ্যাভ্যাস অন্তত পশ্চিমী বিশ্বের তুলনায় স্বাস্থ্যসম্মত। 
কোভিড রোগীদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল শ্বাসকষ্ট। দুগ্ধজাত খাদ্য, রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত এবং ফ্রোজেন মাংস শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। বাঙালি বিজ্ঞানী তথা ব্রাজিলের ফেডারাল ইউনিভার্সিটি অব মিনাস জেরাইসের অধ্যাপক দেবমাল্য বাড় এই দলের অন্যতম সদস্য। তিনি বলেন, ‘সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পশ্চিমী দেশগুলির মানুষ ভারতীয়দের তুলনায় ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি রেড মিট খান। এছাড়া, ৮-১২ গুণ বেশি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ৫-৭গুণ বেশি দুগ্ধজাত খাদ্য, ১০-১২ গুণ বেশি কফি এবং দ্বিগুণ অ্যালকোহল সেবন করেন। সেখানে ভারতীয়রা পাশ্চাত্যের মানুষের তুলনায় ১.৫ গুণ বেশি ডাল ও সব্জি খাদ্যতালিকায় রাখেন। দানাশস্যের (হোলগ্রেইন) পরিমাণ ভারতীয় পথ্যে অন্তত চারগুণ বেশি থাকে। বিশেষ করে, মার্কিনি বা ইউরোপীয়রা প্রতিদিন চা বা হলুদের মতো জিনিস গ্রহণ করেন না। সেখানে দেখা গিয়েছে, একজন ভারতীয় গড়ে ১.২ গ্রাম চা এবং ২.৫ গ্রাম হলুদ প্রতিদিন গ্রহণ করেন।’
তিনি আরও জানান, পশ্চিমী দেশের মানুষদের নিউট্রিজিনোমিক্স বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, তাদের ডায়েটে যে উপাদানগুলি থাকে, তা কোভিডের ভয়াবহতা বাড়াতে সক্ষম। বিশেষ মলিকিউলার পাথওয়েতে সেগুলি উদ্দীপকের কাজ করে থাকে। রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, দুগ্ধজাত পণ্য শরীরের ‘সাইটোকাইন ঝড়’ সৃষ্টির জন্য একেবারে আদর্শ। এর ফলেই অবনতি হতে থাকে কোভিড রোগীর অবস্থার। এছাড়া, এই ধরনের খাদ্যে থাকা স্ফিংগোলিপিড এবং পালমিটিক অ্যাসিড, খাদ্যগুলির উপজাত দ্রব্য হিসেবে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড লাইপোপলিস্যাকারাইড শরীরে হাইপারক্যাপনিয়া সৃষ্টি করে। এর অর্থ হল রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণও বাড়ে। এসব কারণে কোভিডে মৃত্যুহার বেড়েছে ওই দেশগুলিতে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) পত্রিকা ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’-এ সম্প্রতি গবেষণাপত্রটি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ২০ জন বিজ্ঞানীর এই দলে অধিকাংশই বিদেশি। তবে দেবমাল্যবাবু ছাড়াও অন্বেষা দে, নির্মলকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বাঙালি প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। 

Previous articleভাগীরথী ব্র্যান্ডের নামে মধু উৎপাদন শুরু
Next articleমোদী পদবি নিয়ে রাহুলের স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here