নিজস্ব সংবাদদাতা, বীরভূম, ১২ আগস্ট: অবশেষে গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হলেন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁকে আনা হয়েছে নিজাম প্যালেসে। এদিন সকাল ৯.৪০ নাগাদ আদালতের নির্দেশনামা মেনে মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে অনুব্রতর বাড়িতে যায় সিবিআই। ১১টা নাগাদ অনুব্রতকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। প্রথমে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে। এরপর তাঁকে আসানসোলে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার হাজিরা এড়ানোর পর বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরের নীচুপট্রিতে অনুব্রত মন্ডলের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। ১০-১২টি গাড়ির কনভয় নিয়ে পৌঁছে যান এই কেন্দ্রীয় এজেন্সি।বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। এর আগে গরুপাচার মামলায় ১০ বার অনুব্রতকে তলব করেন তাঁরা। কিন্তু, মাত্র একবার হাজিরা দেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। যদিও সেদিন জেরা অসম্পূর্ণ থাকায় ফের হাজিরার জন্য বারবার নোটিস পাঠায় সিবিআই। তবে অসুস্থতার কথা বলে প্রতিবার হাজিরা এড়িয়ে যান অনুব্রত । একইভাবে গতকালও হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি।
সিবিআই সূত্রের খবর, গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে চিকিৎসককে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। কার নির্দেশে ওই সরকারি চিকিৎসক বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন তাও জানতে চায় সিবিআই। জবাবে ওই চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালের সুপারের নির্দেশেই বীরভূমের কেষ্টর বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে অনুব্রতর নির্দেশেই ১৪ দিনের বেড রেস্ট লেখেন চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। তবুও শেষরক্ষা হল না কেষ্টর। আগামী ১০ দিন তাঁকে থাকতে হবে সিবিআই হেফাজতে।
এদিকে অনুব্রত গ্রেপ্তার হয়েই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে সিপিএম ও বিজেপির নেতা কর্মীরা। রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসব মিছিল। কেষ্ট গ্রেপ্তার হওয়ায় অনেক জায়গায় গুড়, বাতাস আর নকুলদানা বিতরণ শুরু করেছে তারা।