আজমির: মেধাবী ছাত্রী। কিন্তু গণধর্ষিতা। এহেন ‘অপরাধে’ তাঁকে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় বসতেই দিল না স্কুল কর্তৃপক্ষ। ঘটনা রাজস্থানের আজমিরের। সিদ্ধান্তের সপক্ষে স্কুল কর্তৃপক্ষের সাফাই, অভিভাবকদের বেশিরভাগই ওই ছাত্রীকে নিয়ে আপত্তি করেছিল। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার জন্য একবারও গণধর্ষণের কথা উল্লেখ করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, কম অ্যাটেনডেন্সের জন্যই এই পদক্ষেপ। বলা হয়েছে, চার মাস ক্লাস করেনি ওই ছাত্রী। তাই অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া যায়নি।
ঘটনার পরই ওই ছাত্রী পাশের একটি স্কুলের শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি আজমিরের শিশুকল্যাণ কমিশন (সিডব্লুইসি)-এর হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করার পরামর্শ দেন। পরে শিশুকল্যাণ সমিতিই এফআইআর দায়ের করে। সিডব্লুসির চেয়ারপার্সন অঞ্জলি শর্মা জানান, নির্যাতিতা ছাত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। যখন মামলাটি তদন্তাধীন, তখন ছাত্রীর বোর্ড পরীক্ষায় বসায় কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখা স্কুলেরই দায়িত্ব। তিনি জানান, দশমের বোর্ড পরীক্ষায় ওই ছাত্রী ৭৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। এহেন মেধাবী পড়ুয়ার শিক্ষাজীবন বিনা দোষেই নষ্ট হবে, এটা হতে পারে না। স্কুলের গাফিলতিতে এক বছর নষ্ট হলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও কমিশন জানিয়েছে।
সম্প্রতি এই ঘটনা সামনে আসে। জানা গিয়েছে, গত বছরের অক্টোবরে নিজের কাকা এবং তার দুই সহযোগী ধর্ষণ করে ওই ছাত্রীকে। বিষয়টি জানাজানি হতে স্কুল কর্তৃপক্ষই ওই ছাত্রীকে বলেছিল, ঘরে থেকেই যেন সে পড়াশোনা চালিয়ে যায়। কারণ হিসেবে বলা হয়, স্কুলে তাঁর উপস্থিতি শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ নষ্ট করতে পারে। তাই এহেন সিদ্ধান্ত। কোনও দ্বিরুক্তি না করে স্কুলের সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেন ওই ছাত্রী। এরই মধ্যে পরীক্ষা চলে আসে। স্কুলে অ্যাডমিট কার্ড আনতে যায় ওই নাবালিকা। তখনই তাকে জানানো হয় যে, সে আর ওই স্কুলের পড়ুয়াই নেই। কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, বহু অভিভাবকের আপত্তিতে এহেন সিদ্ধান্ত। এমনকী টানা চার মাস ক্লাস না করায়, তরে নাম স্কুল থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে।