Home Literature “ক্ষুদির জন্ম”

“ক্ষুদির জন্ম”

224
0

অরবিন্দ সরকার
বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ

গলায় দাগ দেখেই মাসী পেরেছে চিনতে,
মাগো ! তোমার ঘরে তাহলে কে জন্মেছে মা! না আমি চলে গেলাম আর তোমাদের সব শেষ হয়ে গেছে।
মাসির ঘরেই জন্মেছি মাসির চেনা আমি তাই মাসি আর নামকরণ করেনি আমার!
আমি ক্ষুদিরাম রয়েই গেলাম মা! তোমার ক্ষুদি মাসির ঘরে,আর তুমি কোথায় আছো মাগো ! দেখা দাও মোরে।
বিলেতি বয়কট,বড়লাটকে মারতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভুলে অন্যত্র হামলা। চললো মামলা,ওরা দিলো ফাঁসি-তাই তো মাসি ! ভারতের স্বাধীনতার প্রথম শহীদ হলাম। কতো গান বেঁধেছে আমাকে নিয়ে। আমি হাসিমুখে ফাঁসি নিয়েছি গলে, বিদেশি শাসনে লাঞ্ছনা গঞ্জনা দিয়েছে দেশমাতৃকাকে। প্রতিশোধ চেয়েছিলাম- পারিনি!
নেতাজি,বিনয়,বাদল দীনেশ বিদেশি হঠানোর মন্ত্রে সহিংস আন্দোলন গড়লেন। স্বাধীনতা কি চেয়ে পাওয়া যায় মা! ওটা ছিনিয়ে নিতে হয়। তারপর কি যে হলো আঁধারে চুক্তি ভাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা। লড়াই যুদ্ধ না করেই ফল। ইংরেজের ভারতীয় বন্ধু বান্ধব হাঁটু গেড়ে স্বাধীনতা চাইলো। অহিংস পদ্ধতিতে স্বাধীনতা। ভিক্ষা দিলো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। আইন কানুন পোষাক রাস্তার নাম সব থেকে গেলো। ব্যবসা বাণিজ্য থেকে গেলো। এতোদিনে যে ভারতীয়রাও বিলাতী হয়ে গেছে মা! স্বদেশী চেয়ে বিদেশি পছন্দ। মা তাই তুমি কি হারিয়ে গেছো! মাম্মি হয়ে? মাসিরা আন্টি হয়েছে! বাবা হয়েছেন ড্যাডি! মা এই স্বাধীন দেশে আমি সন্ত্রাসী! নেতাজি পরবাসী, তিনি কোথায় তার জন্য চেয়ে আছেন দেশবাসী। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চাইনা তার সন্ধান, তাইতো রেখে চলে ব্যবধান। চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশনেতারা নেতাজি এলে তুলে দিতে হবে তাদের ওদের হাতে। স্বাধীনতার আগের পর্ব তাই ওর বিচারের ভার ব্রিটিশের। সুবোধ বালকের মতো দাসখৎ দিয়ে শঙ্খ বাজিয়ে দেশমাতৃকার দেহ খণ্ড বিখণ্ড ক’রে,জাতিদাঙ্গায় স্বাধীন। মাগো! তোমার ক্ষুদিরাম আবার লড়াই করবে মা! ব্রিটিশের বীজ এখনও রয়ে গেছে। তাকে উপড়িয়ে ফেলতে আবার গলায় ফাঁসি নেবো মা! তোমার ছেলে যতবার জন্মাবে ততোবারই ফাঁসির কাঠে ঝুলবে মা! স্বাধীনতার আগের সিংহাসন আর বর্তমানের সিংহাসনে ফারাক নেই মা! ফারাক শুধুমাত্র প্রজারা। তাঁরা একই তিমিরে রয়েই যাবে। স্যার স্যার ঘুচবে না মা!

Previous article“স্বাধীনতার খোঁজে”
Next articleস্বাধীনতার প্রথম দিনের ছবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here