আসানসোল: বধূ নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ডিভোর্স ও খোরপোষের মামলা করেন আসানসোলের শিক্ষিতা তরুণী। বাপের বাড়ির একমাত্র মেয়ে তিনি, যথেষ্ট আদরে মানুষ। তাঁর অভিযোগ, স্বামী ও শাশুড়ির সঙ্গে ঘর করা অসম্ভব। তাই ছোট ছেলে কোলে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্য কোর্ট থেকে মামলাটি আসে জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রে। তাঁদেরই মিডিয়েশন সেন্টারে মিডিয়েটরের (মধ্যস্ততাকারীর) সামনে হাজির হন বিবাদমান দম্পতি। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে মিডিয়েটর আইনজীবী বুঝতে পারেন, সংসার ভাঙার মূলে শাশুড়ি-বউমার ইগোর লড়াই। বেসরকারি সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত ছেলেটিও মায়ের একমাত্র ছেলে, স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলের প্রতি অধিকার ছাড়তে নারাজ তিনিও। অন্যদিকে বউমা চান, মাকে ছেড়ে স্বামী তাঁর সঙ্গে পৃথক ঘর বাঁধুক। সব শুনে মিডিয়েটর নির্দেশ দেন, ‘শাশুড়ি যখনই আসবেন আপনি একটা প্রণাম করবেন। বাকিটা আমি দেখছি’। আসানসোল আদালতের মিডিয়েশন সেন্টারে শাশুড়ি আসতেই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন বউমা। তারপরই বউমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন শাশুড়ি। তুই আমাদের ছেড়ে যাস না, আর্জি শাশুড়ির। শাশুড়ি থেকে মা হয়ে ওঠা বৃদ্ধার প্রতি বউমার অভিমানও গলে জল। মুখের হাসি চওড়া হল দুই পরিবারের। অবশেষে স্বামীর হাত ধরে শ্বশুরবাড়ি ফিরল অভিমানী তরুণী। এক প্রণামই যে ভাঙা সংসার জোড়া লাগতে পারে তার সাক্ষী রইল আসানসোল আদালত।