কলকাতা: বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত ১০৭তম স্থানে। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স-এর প্রকাশক কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং ওয়েলট হাঙ্গার হিলফে এই ক্ষুধার মাত্রাকে ‘গুরুতর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। প্রতিবেশী পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল এবং মায়ানমারকে যথাক্রমে ৯৯, ৬৪, ৮৪, ৮১ এবং ৭১ স্থানে রাখা হয়েছে। যে সব দেশে ভারত থেকে দানা শস্য, চাল, গম ইত্যাদি না পাঠালে ঠিক মতো খাওয়া হয় না। ভারতের থেকে তারা রয়েছে অনেক উপরে। অনেকটা অন্ধের হস্তিদর্শনের মতো ব্যাপার! বুদ্ধিজীবীদের অনেকের ধারণা, এই সমীক্ষার মাধ্যমে দেশের কিছু ঘুষপেট সংবাদমাধ্যম এবং দেশদ্রোহী রাজনৈতিক দলগুলিকে সন্তুষ্ট করা হয়েছে।
১৩০ কোটি নথিভুক্ত মানুষের দেশ বর্তমান ভারতবর্ষ। তবে এই মুহূর্তে প্রকৃত সেন্সাস হলে সেই সংখ্যাটা ১৪০ কোটির আশেপাশে চলে যেতে পারে। সেরকমই একটি পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে বিশ্বের ক্ষুধা সূচক মাপতে এসেছে আয়ারল্যান্ড ও জার্মানির দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাও গুটিকতক সাদামাঠা লোক নিয়ে। তাদের কাছে সায়েন্টিফিক সার্ভের কোনও পরিকাঠামোয় নেই। অথচ ভারতের মতো বৃহত্তর দেশে মূলত তিন হাজার নাগরিকের উপর সমীক্ষা করা হয়েছে। অর্থাৎ ভারতের প্রতিটি রাজ্যে কমবেশি ১০০ জন মানুষকে নিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়েছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সেই তিন হাজার লোকের মধ্যে অধিকাংশই গরিব ও বস্তি এলাকার বাসিন্দা। যারা অধিকাংশই দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন। দেশের সীমিত সংখ্যক মানুষের সেই পরিসংখ্যান গড় করা হয়েছে ১৩০ কোটি দেশবাসীর উপর।
এই কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড হল আয়ারল্যান্ডের একটি NGO। অন্যদিকে ওয়েলট হাঙ্গার হিলফে হল জার্মানির এক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রক এদের করা সমীক্ষাকে একটি ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ক্ষুধা সূচক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, Global Hunger Report 2022-তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা রয়েছে। পদ্ধতিগত ভুল রয়েছে অনেক।
কিন্তু সেই ভুলগুলি আসলে কী? জানা গিয়েছে, ক্ষুধা সূচক নির্ণয়ে ব্যবহৃত চারটির মধ্যে তিনটি গণনায় শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর ভিত্তি করে। এটা কখনোই একটি দেশের পরিসংখ্যানের মাপকাঠি হতে পারে না। আর ভারতের মতো বৈচিত্রপূর্ণ দেশে তা মোটেই নয়। সমীক্ষার চার নম্বর উপকরণে রয়েছে ১৩০ কোটি ভারতবাসীর মধ্যে মাত্র তিনহাজার লোকের মতামত। যা খুবই অযৌক্তিক ও অবৈজ্ঞানিক। অথচ সমীক্ষকরা জানেনই না, করোনার মতো অতিমারীর সময় দেশবাসীকে রেশন কার্ড ছাড়াই বিনামূল্যে রেশন ও খাদ্যশস্য বিতরণ করেছে ভারত সরকার।