কলকাতা, ২১ নভেম্বর: প্রায় ২০ বছর জেলবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন সুন্দরবনের গোসাবার বাসিন্দা চিত্ত গায়েন। কোনও অপরাধ না করেও স্রেফ ভাগ্যের ফেরে কারাগারের অন্ধকারে দিন কাটালেও মিলছে না সঠিক তথ্য। অবশেষে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে কলকাতা হাইকোর্ট দ্বারস্থ হল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের।
২০০৩ সালের ঘটনা। একদল মৎস্যজীবীর সঙ্গে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন চিত্ত গায়েন। এক রাতে মাঝনদীতে মাছ ধরার সময়
জলদস্যুদের হাতে ধরা পড়ে তাদের দল। ব্যস এ পর্যন্তই মনে করতে পারেন চিত্তবাবু। পরের দিন জ্ঞান ফিরে আসলে দেখেন, তিনি একা বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের হেফাজতে। এরপর পুরো ঘটনা বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের আধিকারিকদের বললেও, তাঁর কথায় তাঁরা কর্ণপাত না করে বেআইনি অনুপ্রবেশ, অস্ত্র আইন সহ একাধিক ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেন। তারপর থেকে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে বাংলাদেশের জেলেই তাঁর ঠিকানা।
২০১৬ সালে দু’দেশের মধ্যে যে বন্দি প্রত্যর্পণ হয়, তাতে চিত্তবাবু সহ কয়েকজন সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দিকে ভারতে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। দেশে ফেরার পর ঠাঁই হয় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। তারপর বারুইপুর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তাঁর ঠিকানা সেখানেই।
তবে জানা যায়, অস্ত্র আইনে চিত্তবাবুর ৩০ বছরের সাজা হলেও ২০১৯ সালের ১৮ জুন তাঁকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। আইনজীবী তাপস ভঞ্জ বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে।
সম্প্রতি ওই মামলার শুনানিতে চিত্তবাবু হাইকোর্টে জানান, বহু চেষ্টা করেও তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশের কপি পাননি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিশেষ সচিব মারফত বিদেশমন্ত্রকে বলেও কোনও লাভ হয়নি।
এই বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ওই নির্দেশের কপির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অবিলম্বে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। চিঠি লিখে বিষয়টি জানাতে হবে বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনারকে। ১৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।