Home National চীনের হাত থেকে শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডর রক্ষায় প্রস্তুত ভারত

চীনের হাত থেকে শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডর রক্ষায় প্রস্তুত ভারত

150
0

শিলিগুড়ি: সিকিম ও ভুটানের মাঝখানে চুম্বি উপত্যকায় নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে চীনা লাল ফৌজ। কৌশলগতভাবে ভারতকে বিপাকে ফেলতে তাদের মূল লক্ষ্য, শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডর। কারণ, এই করিডর কব্জা করতে পারলেই উত্তরপূর্ব ভারতের একটা বড় অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তাই, এই চিকেন নেক রক্ষায় একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত সরকারও। প্রস্তুত সেনা জওয়ানরাও। ভারতীয় সেনা বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান তথা ইস্টার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল রাণাপ্রতাপ কলিতা এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ওয়াকিবহাল। যোগাযোগের জন্য শিলিগুড়ি করিডর আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যে ২০-২৫ কিলোমিটার অংশ ‘চিকেন নেক’। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ইতিমধ্যেই সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এলাকার পরিকাঠামোগত উন্নয়নও করা হচ্ছে।

উত্তর-পূর্ব সীমান্তে রাস্তা, টানেল সহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় একগুচ্ছ উন্নতির কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। অরুণাচলে নতুন একটি টানেল তৈরি হচ্ছে। যা দিয়ে সারাবছর যান চলাচল করতে পারবে। উত্তর-পূর্ব সীমান্তের একাধিক গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান এদিন জানিয়েছেন, ‘সীমান্তের ১৩০টি গ্রামকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেনার পক্ষ থেকে ওই গ্রামের পুনগর্ঠনে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’। প্রসঙ্গত, এর ফলে, সীমান্তে একটি ‘মানব প্রাচীর’ তৈরি হবে। খবর মিলবে অনুপ্রবেশেরও। তাই এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে সেনা। মায়ানমারের জঙ্গি বিরোধী ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে’র প্রশ্নে তিনি বলেন, একটি গোলা সীমান্তে নদীর উপর পড়েছিল। তাতে কোনও ক্ষতি হয়নি। উত্তর-পূর্ব সীমান্তের বড় অংশে রয়েছেন বৌদ্ধ ধর্মের মানুষ। তাই সেনার একটি গ্রুপকে বৌদ্ধ ধর্ম ও ভাষার উপরেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান। যাতে স্থানীয় মানুষদের ভাষা বুঝতে এবং তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সুবিধা হয়। অগ্নিবীর প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছে, ২ জানুয়ারি থেকে অগ্নিবীরের প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।

শুক্রবার বিকেল কলকাতা প্রেসক্লাবে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন সেনার পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান রাণাপ্রতাপ কলিতা। ২৬ জানুয়ারি দেশের সাধারণতন্ত্র দিবসে ‘পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল’ (পিভিএসএম) সম্মান পেয়েছেন। এদিন তাঁকে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে গুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। সেখানেই প্রশ্ন-উত্তর পর্বে চুম্বি উপত্যকায় চীনের ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে তিনি ওই বক্তব্য রাখেন। প্রসঙ্গত, চীনা আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য শিলিগুড়িতে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি সহ বায়ুসেনার হাসিমারা এয়ারফোর্স স্টেশনে রাফালও নামানো হয়েছে। অরুণাচল সীমান্ত ইস্যুতে চীনা আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল। তিনি জানিয়েছেন, ‘এই মুহূর্তে পরিস্থিতি ‘স্টেবল’। কিন্তু, ‘আনপ্রেডিকটেবল’, অর্থাৎ, অনিশ্চিত। কেন আনপ্রেডিকটেবল তার বাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘চীনা সীমান্তের বিস্তীর্ণ অংশ কাঁটাতার নেই। সেখানে প্রকৃত সীমান্ত রেখা রয়েছে। তবে, যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ভারতীয় সেনা প্রস্তুত রয়েছে’। মণিপুরের সীমান্ত অংশে কাঁটাতারের কাজ শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

Previous articleপাঠান দুই দিনে ব্যবসা করল ৩২৫ কোটি
Next articleন্যাশনাল পেনশন স্কিম নিয়ে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here